Skip to content
Menu
Pensive Stories | Mental Health Blog Site
  • Home
  • Categories
    • Anxiety
    • Depression
    • Stress
    • Panic
    • Disorder
  • Podcast
  • TITLTE THREE
  • Submission
  • About Us
    • Contact
    • Team
Pensive Stories | Mental Health Blog Site

বিবেক এবং নি:শব্দ পতন

Posted on August 12, 2020August 12, 2020

শাহানা বেগম একাকী জানালার ধারে বসে বাইরের প্রকৃতি দেখেছেন.. ঝির ঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে, সে দিকে তাকিয়ে নিজের এই একাকিত্বের কথা ভাবছেন! ছবির মত স্মৃতিরা ভীড় করছে মনের ভিতর। এখন এই স্মৃতিদের নিয়েই বেঁচে আছেন তিনি।

তিনটি বাচ্চাকে কি কষ্ট করেই না মানুষ করেছেন! ওদের বাবা ওদেরকে ছোট রেখেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে! এই তিন বাচ্চাকে নিয়ে অথই সমুদ্র পড়ছিলেন তিনি.. তেমন কিছুই ছিল না শুধু স্কুলের চাকুরীটা ছাড়া! এর বাইরে সেলাই মেশিনে কাপড় সেলাই করে কিছু বাড়তি আয়!  এ দিয়েই সংসার চালিয়েছেন..কিন্তু কারো কাছে হাত পাতেননি। তিনটি বাচ্চাই মেধাবী, দুটি ছেলে একটি মেয়ে! বড় ছেলেটি পদার্থ বিদ্যায়, মেয়েটি সমাজ বিজ্ঞান আর ছোট-টি এম-বি শেষ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার আপ্রাণ কষ্টের ফসল এই তিন ছেলে মেয়ের উচ্চ শিক্ষা! ভাড়া বাড়ীতেই কেটেছে জীবন! চাকুরীর বয়স সীমাও শেষ..

বড় ছেলে স্কলারশীপ পেয়ে পি-এইচ-ডি করতে আমেরিকা যাবে..বলল তার পছন্দের মেয়েটিকে বিয়ে করবে! শাহানা রাজী হলেন…বিয়ে হলো,তারা চলে গেল আমেরিকা! মেয়েটির বাবা অবস্থাপন্ন তাই কোন সমস্যা হলো না! শাহানা বেগমের প্রথম সন্তানে থেকে মা ডাক শোনা বন্ধ হল। ফোন আসতো মাঝে মাঝে..ওদের ওতো সময় কোথায়!

এরপর মেয়েটিও বিয়ে করে কানাডা প্রবাসী হল! ছেলে ভাল, শাহানা বেগম খুশি হলেন। দ্বিতীয় বার মা ডাক শোনার পথ বন্ধ হল! তিনি সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্নেহকে লাগাম দিলেন! রইল ছোট ছেলে.. সেও নামী কর্পোরেট অফিসে জয়েন করল! তিনি পুরানো আবাস ছেড়ে ছেলের সাথে অভিজাত এলাকায় উঠে এলেন। পিছনে ফেলে এলেন জীবন যুদ্ধের সেই সংগ্রামী দিনগুল..কিন্তু জানতেন না..ভবিষ্যত তার জন্য রচনা করে রেখেছেন আরেক যুদ্ধ ক্ষেএ! ভালই চলছিল..ছেলে মাকে আগলে রাখে! তার মা ডাক শুনে তিনি ভুলে যান দুটো সন্তানের মা ডাক শোনার আক্ষেপ! এ ছেলেও নিজের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করল। বড় লোকের অতি আদরে বড় হাওয়া মেয়েটি সব তার মন মত চায়! তিনি সবই মেনে নেন ছেলের মুখের দিকে চেয়ে.. তার কাছে সন্তানের শান্তিই সব। নাতনীর মুখ দেখলেন..ভারি খুশি হলেন! আর দুই সন্তানের ছেলে মেয়েদের তো দেখতে পান না..ওরা বড় হয়ে গেছে, কয়েক বার এসেছে কিন্তু তারাও ভীষন ব্যস্ততায় সময় কাটায়..তাকে সময় দেওয়ার সময় কই তাদের!

শাহানা বেগমের শরীর আজকাল ভাল যাচ্ছে না,সারা জীবন খেটেছেন নিজের দিকে না তাকিয়ে..তাই শরীরও ভেঙে গেছে।অসুখ বিসুখ লেগেই আছে! বৌমা ইদানীং বিরক্ত হচ্ছে..ছেলেকে বলছে উনার আরো দুটো সন্তান আছে তারা কেন দেখছে না..বিদেশের মহা ব্যস্ত জীবনে মাকে কিভাবে তারা সময় দিবে সেটাও একটা প্রশ্ন?

হায়রে সংসার ! যাদের জন্য জীবনের সব চাইতে সুন্দর সময়টুকু কঠিন সংগ্রামে কাটিয়ে দিলেন ..তাদের মানুষ করার জন্য নিজের দিকে তাকিয়ে দেখার সুযোগ হয় নাই,এখন এই বৃদ্ধ বয়সে তাদের কাছে বোঝা হয়ে গেলেন! বৌমা কথায় কথায় ঝগড়া করছে ছেলের সাথে..সে আর একা এ দায়িত্ব নেবে না!

ছেলেটাও ত্যাক্ত হয়ে গেছে.. তিন ভাই বোন মিলে সিদ্ধান্ত নিল মাকে একটি নামী বৃদ্ধা আশ্রমে রাখা হবে যেখানে সব রকমের সুযোগ সুবিধা থাকবে! একদিন ছেলেটি নিজের সংসার বাঁচাতে মাকে রেখে আসলো সেই বৃদ্ধা আশ্রমে.. শাহানা বেগমের শেষবারের মত মা ডাক শোনা বন্ধ হল..তিনি নির্বাক হয়ে গেলেন.. সব রকমের সুযোগ সুবিধা রয়েছে এখানে.. নেই শুধু সন্তানের মুখে সেই অপার্থিব শব্দ “মা” বলে ডাক!

ছেলেটা মাঝে মাঝে পুতুলের মত নাতনীকে নিয়ে আসত.. এখন সেটাও কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় চলে আসছে! বৌমা পছন্দ করে না মেয়েকে নিয়ে আসা। ওদের জীবন গড়ে দিতে দিতে নিজের জীবন শূন্য করে ফেলেছেন.. বিনিময়ে কি তার এই পাওনা?

এখন অপেক্ষা করেন মূত্যুর ! এখনো ভাবেন শুধুই সন্তানদের কথা.. মূত্যুর আগে কি ওদের মুখের মা ডাকটি শুনতে পাবেন ! একটু হাতের ছোয়া কি পাবেন ! আমার প্রশ্ন সে সব সন্তানদের কাছে তাদের বিবেক কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে?? দায়িত্ব, মা,বাবার প্রতি প্রকৃত ভালবাসা কোথায়?

“পরিবারই সব”এই বাক্যটি এখন খুব উচ্চারিত হচ্ছে সবার মুখে..মা,বাবা কি পরিবারের বাইরের কেউ ? পরিবারের ভিওিই হচ্ছেন মা, বাবা তাহলে? সংসারে থাকতে গেলে উঁচু নিচু হবেই..তারপরেও জুড়ে থাকা, দায়িত্ব বোধ, মায়া মমতা তো থাকতে হবে..বিবেকের এই করুন পরিনীতি দেখে দু:খ হয়! বিবেকই ঘুমিয়ে আছে না বিবেকের এই নি:শব্দ পতন এরা টের পাচ্ছে না?

একজন মা হিসাবে আমার অনুরোধ সে সব সন্তানদের  কাছে ..একজন মায়ের সাথে যেন এমন না হয়! বিবেক জাগরিত হোক সব সন্তানদের মাঝে, দায়িত্ব বোধ তৈরি হোক এবং দায়িত্ব পালন করতে হবে, এটা মানতে হবে। বিবেকের যে পতন হচ্ছে, সেটা থামাতে হবে।যে মা তার সর্বস্ব দিয়ে সন্তানকে মানুষ করছে,তার কি এটি প্রাপ্য? এটি গভীর ভাবে অনুধাবন করতে হবে।

তাহলে একজন মা কিংবা বাবাকে শেষ বয়সে প্রিয়জন ছেড়ে বৃদ্ধা আশ্রমে যেতে হবে না।তা নাহলে এ সন্তান-রাও হয়তো ভবিষ্যতে কোন এক বৃদ্ধা আশ্রমে রয়ে যাবে এবং চোখের জল ফেলবে তাদের সন্তানের জন্য… অপেক্ষা করবে সেই অপার্থিব এবং পৃথিবীর মধুরতম শব্দ মা কিংবা বাবা ডাকটির জন্য…

Fouzia Yasmin Eva has completed her graduation from the Department of History, University of Dhaka. She is one of the valuable content contributors of Pensive Stories.

Spread the love

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Popular

  • ডিপ্রেশন? 334 views
  • ব্যর্থতা- ০২; বলতে হয় না… 317 views
  • ব্যর্থতা- ০১; ভোগ ও সরল মাতৃত্ব 288 views
  • ব্যর্থতা- ০৩; অবুঝ 275 views
  • What is Pensive Stories?- Note from the Editor 269 views

Categories

  • Anxiety (5)
  • Artwork Friday (6)
  • Depression (19)
  • Editorial (3)
  • Insecurity (8)
  • Loneliness (11)
  • Mental Disorders (6)
  • Pioneer Tuesday (7)
  • Podcast (3)
  • Positive Stories (10)
  • Stress (6)
  • Suicide (6)

Contact Us

Twitter LinkedIn Facebook Pinterest
©2021 Pensive Stories | Mental Health Blog Site | WordPress Theme by Superbthemes.com