Skip to content
Menu
Pensive Stories | Mental Health Blog Site
  • Home
  • Categories
    • Anxiety
    • Depression
    • Stress
    • Panic
    • Disorder
  • Podcast
  • TITLTE THREE
  • Submission
  • About Us
    • Contact
    • Team
Pensive Stories | Mental Health Blog Site

একাকিত্ব এবং আলো…

Posted on September 16, 2020September 16, 2020

একাকিত্ব

নুসরাত আহমেদ অটোয়ার এই ছোট বাসার বারান্দায় বসে, কফি হাতে সকাল দেখছে। কী ঝকঝকে আশাবাদী নীল আকাশ..আকাশ যেন আশার আলো ছড়াচ্ছে! এখন এখানে সামার।প্রকৃতি এখন ঘোর লাগানো সবুজ..সাথে বর্নিল ফুলের মেলবন্ধনে মন জুড়িয়ে যায়।সামারের সময়টা ছাড়া সব সময় শীত..কখন স্নো পড়তে শুরু করবে বলা মুশকিল..তারও একটা সৌন্দর্য আছ,তবে এক সময় জীবন যাপন কঠিন করে তোলে।সে এ সব নিয়েই মিলে মিশে আছে।সে একা।এই একাকিত্বকে সে সঙ্গী করে নিয়েছে। কষ্ট হয়। তবে হারতে নেই … এটা জীবনকে দেওয়া তার পাল্টা জবাব… ছেলে বুবাই অ্যালবাটা ইউনিভার্সিটিতে পড়া শুনা শেষ করে ওখানেই তরুণ শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছে, তুখোড় ছাত্র.. নুসরাত গর্বিত। আজকে এই সকাল বেলার আকাশ,সবুজ প্রকৃতি আর ছুঁয়ে যাওয়া হাওয়া সব কিছু মিলে কেমন একটা ঘোর লাগা অনুভূতি হলো। হঠাৎ করে একুশ বছর আগের সেই সময়টা চোখের সামনে ভেসে এসে ঢেকে দিলো সব…

নুসরাত আর দশটা মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা মেয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে।তবে সে একটু আলাদা সবার থেকে।তুমুল তার্কিক ছিল।লেখার হাত বরাবর ভাল।পত্র পত্রিকায় বিভিন্ন বিষয়ে লিখতো। সব জায়গায় লিডারশিপ নেওয়ার একটা ক্ষমতা ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতেই স্বজাত কারনে রাজনীতিতে ঝুঁকলো,নারীবাদী আন্দোলনে, মানববন্ধন এবং বিভিন্ন ইস্যুতে প্রথম সারিতে দেখা যেত তাকে।সময় যাচ্ছিল ভাল..এর মধ্যে পরিচয় শাফায়াত এর সাথে।উড়নচন্ডী গোছের।তবু ভালবাসলো..পড়া শেষ করে বিয়ে …সবার অমতে। চাকুরী নিলো একটা এনজিওতে..শাফায়তও একটা চাকরী পেলো…কিন্তু স্বভাবের কারনে বেশি দিন কোথাও টেকে না। এর মধ্য বাচ্চা হলো..বুবাই।কিছুদিন ভালই চললো।এরপর শুরু হলো সম্পর্কের টানা পোড়ন। নুসরাত চাকরী, বাচ্চা দেখা , সংসার সামলানো সবই করছিলো।কিন্তু শাফায়ত চাকরী হারানো,উগ্র মেজাজ..সব কিছু মিলিয়ে নুসরাতকে শেষ সীমায় পৌঁছে দিল।

সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকলো সে নুসরাতের গায়ে হাত তুলে।তার মত বলিষ্ঠ,দৃঢ় চরিত্রের মেয়ে এটা মেনে নিতে পারলো না । ফলাফল…বিচ্ছেদ। বাবার বাসায় ফেরত গেল।আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় একটি মেয়ের বিয়ে বিচ্ছেদ পরিবারে খুব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে…তার বেলায়ই তাই হলো।পরিবারের সাথে থেকেও সে একা হয়েই রয়ে গেলো। বারংবার তাকে শুনতে হয়েছে সে একা এবং একলা একটি মেয়ে কিভাবে জীবন কাটাবে? এরপর অফিসে বাঁকা কথা,পুরুষ কলিগের ইশারা,পরিবার থেকে বিয়ের চাপ সব কিছু মিলে ও ত্যাক্ত হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত স্থির করলো বিদেশে চলে যাবে। জীবন থেকে শিখেছে ..কালো আর সাদা তার মাঝে ধুসর বলে কিছু থাকে..কিন্তু জীবনের একটা সময়ে হয় সাদা নয় কালো, এই বোধ নিয়েই এগিয়ে যেতে হয়…কাগজ পত্র সব ঠিক করে এপ্লাই করলো।ডাক আসলো..অটোয়ায় এক কাজিনের কাছে উঠবে ..বুবাই আর ও একদিন সব তিক্ততা পিছনে ফেলে চলে এলো অটোয়ায়।

নুসরাত চার বছরের বুবাইকে নিয়ে অটোয়া এয়ার পোর্ট থেকে বেড়িয়ে কেমন একটা শূণ্যতার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলো..অনুভূতিতে কিছুই ছিল না,ছিলো শুধু বুবাইয়ের ছোট্র হাতটার আঁকড়ে থাকার বোধ.. কাজিন এসে নিয়ে গেল ওর বাসায়।ওর মত স্বাভিমানী আর স্বাধীনচেতা মানুষের পক্ষে অন্যের উপর কিংবা ভাতার উপর থাকা সম্ভব নয়।একটা ওড জব পেয়েও গেল।এরপর উঠলো গিয়ে অল্প ভাড়ায় বেসমেন্টের এক রুমে ..জীবন আরেক বার কঠিন পরীক্ষার সামনে দাঁড় করালো…একা! কিন্তু নুসরাত দমলো না..বুবাইকে স্কুলে ভর্তি করে ..নিজেও কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন কোর্স করা শুরু করলো।উদয়াস্ত খাটতে লাগলো।ভাল ছাত্রী ছিল..কোর্স গুলোতে ভাল ফল আসলো..ভাল একটা জব পেলো..বাসাও পাল্টালো।তবুও সংগ্রাম থেমে থাকেনি..বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসতো স্কুল শুরুর বেশ আগে..কারন অফিসে পৌঁছাত হবে সঠিক সময়ে..কিন্তু বাচ্চাকে আগে দেওয়ার নিয়ম নেই! তাই প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে স্কুল থেকে একটু দূরে দাঁড় করিয়ে আসতো বুবাইকে ,বলে আসতো, এ কথা যেন কেউ না জানে।

বুবাইও  ঐটুকু বয়সে বুঝে ফেলেছিলো জীবনের খেলা… নুসরাতের বুকের ভিতর রক্ত ক্ষরণ হতো ..কিন্তু কিছু করার নেই ..ও যে একা।এভাবেই একা, জীবনের দেওয়া অনেক পরীক্ষার মুখামুখি হয়ে,জীবনকে পাল্টা জবাব দিতে দিতে.. ..আজকে এখানে এসে পৌঁছেছে.. কোথায় যেন এক সাথে একদল পাখি ডেকে উঠলো…সেই কলতানে নুসরাত এক ঝটকায় ফিরে এলো অটোয়ার এই বারান্দায়।জীবন এই একা নুসরাতকে বুঝিয়ে দিয়েছে “জীবন মানে যুদ্ধ”।একাকিত্ব মানুষকে হতাশার দিকে ঠেলে দেয়..কিন্তু একাকিত্বের সাথে লড়াই করে ভাল কিছু করার দৃঢ়তা দেখালো নুসরাত।জীবন তাকে বার বার পরীক্ষায় ফেলেছে..একা যুদ্ধ করেছে বৈরি সময়ের সাথে ।হার মানেনি।হারতে নেই এই বোধ তাঁব ভিতরে প্রোথিত হয়ে গেছে…জীবনকে পাল্টা জবাব দিতে শিখে গেছে।যে লড়তে জানে সে জিতে যায়।সে একাই লড়ছে জীবনের সাথে …জিতেও গেছে।

আলো

এই যে ছেলেকে পৌঁছে দিয়েছে তার গন্তব্যে।নিজে চাকরী করছে, লেখালেখি করছে,বই পড়ছে..একাকিত্বের ভিতর থেকে বের করে আনছে সুন্দর মুহূর্ত । মাঝে মাঝে যে ভিতরে ভাঙচুর হয় না, তা নয়..হয়। খুব গভীর রাতে হঠাৎ মনে হয় একা আছি, কেউ নেই।বুকের ভিতর কষ্ট জেগে উঠে…কাঁদে একা একাই..তার এ কান্নার কোন স্বাক্ষী নেই।এ কান্না ভিতরের সব কষ্টকে জল করে বইয়ে দেয়..ভিতরটা হালকা হয়ে যায়।অনেক মানুষের ভিড়ে থাকা মানুষও কাঁদে ..তাদেরও কষ্ট থাকে। একেকটা মানুষ অনেকের মাঝে থেকেও একা। সে সবার সাথে আছে,আবার নেইও…দৃশ্যত দেখা যায়..কিন্তু তাকে সব কিছু স্পর্শ করে না।

চারিদিকে এমন অনেক মানুষ আছে ..যারা জীবনের সাথে একাই লড়ছে.. আমরা তাদের দেখি ..তাদের হাসিমুখ দেখে বুঝতে পারি না..তাদের একাকিত্বের কষ্ট, তাদের একা লড়াইয়ের সংগ্রাম।তবুও তারা ভেঙে পড়েনা…এটাই তাদেরকে জয়ী করে দেয়। নুসরাত উঠে পড়ে ..আজকের এই ঝক ঝকে সকাল মনের ভিতর এক ভাল লাগার জোয়ার বইয়ে দিলো।সকালের কাজ টুকু শেষ করে বেড়িয়ে পড়লো বাইরে..সাথে নিলো ল্যাপটপ… লিখবে।সিঁড়ি দিয়ে নেমে যেতে দেখা হলো পড়শীর পুতুলের মত মেয়েটির সাথে.. দেখেই অমলিন হাসি, একটু দুরে যেতেই আরেকজন পরিচিত মানুষ হেসে কুশল বিনিময় করলো..এটুকু ও নুসরাতের কাছে জীবনিশক্তি..এরপর পৌঁছে যায় লেকের কাছে…লেক অন্টারিও ..বিশাল..সীমান্ত দেখা যায় না। পাড়ে বসে তাকিয়ে থাকে!কি টলটলে স্বচ্ছ জল..লেকের পাড়ের গাছ গুলো ডালসহ নুইয়ে জল ছুয়ে আছে ..তার বনজ গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে চারিধার…মনটা ভরে যায়।

এর সৌন্দর্য আর বিশালতার সামনে একাকিত্ব কোথায় মিলিয়ে যায়..নুসরাত টেরও পায় না…ওখান থেকে ফেরার পথে… ঢুকে পড়ে কফিশপে..এক মগ কফি নিয়ে বসে পড়ে জানালার পাশে ছোট্র টেবিলে।বাইরে তাকিয়ে দেখে সব কিছু চলমান..তবে সে কেন থামবে? একা বলে! না থামবে না। ল্যাপটপ খুলে চিন্তা করে এক মুহূর্ত কি লিখবে…তারপর শুরু করে তার একাকিত্বের লড়াইয়ের জীবন কাহিনী…যা অনেকের মনে আলো ছড়াবে।লেখা শুরু করে..ল্যাপটপের স্ক্রিনে যে শব্দটা প্রথম জ্বলে উঠে তা হচ্ছে ..আলো…

Written by: Fouzia Yasmin Eva


Fouzia Yasmin Eva has completed her graduation from the Department of History, University of Dhaka. She is one of the valuable content contributors of Pensive Stories.

Spread the love

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Popular

  • ডিপ্রেশন? 415 views
  • ব্যর্থতা- ০২; বলতে হয় না… 340 views
  • ব্যর্থতা- ০৩; অবুঝ 336 views
  • Take Charge of your Mood Swing and be your OWN BOSS! 330 views
  • ব্যর্থতা- ০১; ভোগ ও সরল মাতৃত্ব 310 views

Categories

  • Anxiety (7)
  • Artwork Friday (6)
  • Depression (21)
  • Editorial (3)
  • Insecurity (10)
  • Loneliness (11)
  • Mental Disorders (7)
  • Pioneer Tuesday (7)
  • Podcast (3)
  • Positive Stories (13)
  • Stress (10)
  • Suicide (7)

Contact Us

Twitter LinkedIn Facebook Pinterest
©2021 Pensive Stories | Mental Health Blog Site | WordPress Theme by Superbthemes.com